বছরের শেষ গল্প
গত বছরের বর্ষবরণের রাতটা যেন ছবির মত পরিষ্কার দেখতে পান অমলবাবু |রাত ৯ টা নাগাদ পাড়ার চায়ের দোকানে এক গ্লাস গরম আদা চা নিয়ে পরের গল্পের প্লটটা ভাবতে চেষ্টা করছিলেন তিনি | এখন দোকানে তিনিই একমাত্র খদ্দের | আশপাশের কিছু দোকানপাট ইতিমধ্যেই ঝাঁপ ফেলা শুরু করেছে | আজ রাস্তা ঘাটে সন্ধে নামতেই লোক সংখ্যা কমেছে অনেকটাই | এইরকম কনকনে ঠান্ডা রাতে কেই বা বাইরে থাকতে চায়! অবশ্য এর ব্যতিক্রম পাশের গলিতেই কিছুক্ষন ধরে তার কানে আসছিল বটে | কিছু ছেলে ছোকরা মিলে মাইকে 'সাত সমুন্দর পার মে তেরে পিছে' চালিয়ে উন্মত্ত নৃত্য করে নতুন বছরকে আগমন জানাচ্ছে |
জ্যাকেটের চেনটা গলা অব্দি টেনে, গ্লাসে শেষ চুমুকটা দিতে যাবেন, ঠিক এমন সময়
লোকটাকে দেখতে পেলেন অমলবাবু | কমলা হ্যালোজেনের আলো ক্ষীণ করে দেয়া ধোঁয়াশা
চিরে কখন যে নিঃশব্দে সামনের বেঞ্চে এসে বসেছে লোকটা তা বিন্দুমাত্র টের পাননি
অমলবাবু|
প্রথম দেখে অমলবাবুর যেন মনে হয়েছিল লোকটা1কে তিনি আগেও এখানেই দেখেছেন | কিন্তু
পরমুহূর্তেই বুঝলেন সেটা তারই মনের ভুল |
*
হঠাৎ বেজে ওঠা মোবাইলের রিংটোনে তার চিন্তা ভঙ্গ হল |
স্ক্রিনে ভেসে আসা নামটা
চেনা | অমূল্য পাঠক, 'আবেগ' বলে একটি
পত্রিকার সম্পাদক |
'অমলবাবু, আপনার গল্পটা কবে পাচ্ছি যদি একটু বলেন | ' হেসে বললেন
অমূল্যবাবু |
'চিন্তা নেই | এখনো তো দু সপ্তাহ বাকি | হয়ে যাবে | থ্রিলারই দেব |' তার সাউথ কলকাতার
দুকামরার ফ্ল্যাটে পায়চারি করতে করতে বললেন অমলবাবু |
গত কয়েক বছরে অমল সরকারের নাম বাংলা পাঠক মহলে প্রায় সবারই জানা| তার লেখা শেষ
দুটি বই অত্যন্ত্য জনপ্রিয় হয়েছে | এছাড়া তার ছোট গল্পের সম্ভারও কম বলা চলে না | সোশ্যাল মিডিয়া
প্লাটফর্ম গুলোতে তার লেখা গল্প বেশ নিয়মিত ভাবেই 'অডিও স্টোরি' হিসেবে পড়ে শোনানো হয় |
তবে বই লিখলেও প্রত্যেক
বছর নিয়ম করে অমলবাবুর দুটি ছোট গল্প প্রকাশিত হয় | কোনো একটি পূজাবার্ষিকীতে এবং বছরের শেষে
খৃস্টমাসের সময় একটি পত্রিকায় | সেই সূত্রেই অমূল্যবাবুর ফোন | ছেলেবেলায় পুজো
এবং শীতের ছুটিতে বই পড়ে সময় কাটাতেন বলে নিজের পাঠকদের সেই উপহার থেকে কখনো
বঞ্চিত করবেন না ঠিক করেছিলেন |
যদিও অমলবাবুর জনপ্রিয়তা বেশি এডভেঞ্চার, কলেজ বা টিন ফিক্শন এবং রোমান্টিক গল্পে, এবার অমূল্যবাবু
তার থেকে একটি থ্রিলার গল্প
চেয়েছেন |
'বলছিলাম এতে আপনাকে আমাদের পত্রিকার মাধ্যমে
একটা নতুন রূপে পাবে পাঠকরা | বাকিটা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছে| ' একটু ইতস্তত করেই
প্রস্তাব রেখেছিলেন সম্পাদক মহাশয় |
কথাটা মনে ধরেছিল অমল সরকারের | শীতকালে কম্বলের তলায় জম্পেশ একটা থ্রিলার তার
জনপ্রিয়তা কমাবে না সেই বিষয়ে তার কোনোরূপ দ্বিধা ছিল না |
ফোন রেখে লেখায় মনযোগ দিতে চেষ্টা করলেও, অমলবাবুর মন কিন্তু আবার ফিরে গেল সেই
বর্ষবরণের রাতে দেখা হওয়া লোকটার দিকেই | ভারি অদ্ভুত কিছু কথা বলেছিল লোকটা সেই রাতে |
চায়ের দাম মেটাতে উঠবেন, ঠিক এমন সময় লোকটা বলে উঠল:
'একটা গল্প শুনবেন নাকি দাদা?'
লোকটার শরীর আপাদমস্তক একটি খয়েরি শালে ঢাকা, শুধু মুখটুকু
দেখা যাচ্ছে | তার মুখে কাঁচাপাকা দাড়ি| বয়েস মনে হয় পঞ্চাশোর্ধ নয় | কথা বলাতে তার
দাঁতে জর্দা দেওয়া পানের লাল দাগ দেখা যায় |
'গল্প? কি গল্প? হঠাৎ আমাকেই বা গল্প শোনাতে চাইছেন কেন?' একটু অবাক হয়ে
বললেন অমলবাবু |
'শুনেই দেখেন না | আপনার তো আবার গল্প নিয়েই কারবার |’ একটা বিশ্রী
তাচ্ছিল্য মিশ্রিত শব্দ করে হেসে বলল লোকটা |
কিঞ্চিৎ চমকে উঠলেন অমলবাবু |
লোকটা যেন তার মনের কথা বুঝতে পেরে নিজেই উত্তর দিল:
'আপনি তো লেখক মানুষ | তাই ভাবলাম গল্পটা বলি আপনাকে |'
বেঞ্চটায় পুনরায় বসে পরলেন অমলবাবু | লোকটা এবার
কিছুটা মুখ এগিয়ে নিয়ে এসে যা বলল তাতে আরো অবাক হলেন অমল সরকার |
'তবে একটা শর্ত আছে দাদা | এ গল্প একবার
শুনলে আপনাকে কিন্তু আগামী এক বছরের মধ্যে ছাপাতে হবে| আপনার নাম দিয়েই, কিন্তু ছাপাতেই হবে |’
কি অদ্ভুত ব্যাপার |
কে এই লোকটা? | কিন্তু লোকটার কথাগুলো শুনে অমলবাবুর কৌতহল আরো
যেন কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছিল ইতিমধ্যেই | তিনি বেঞ্চ ছেড়ে উঠলেন না |
'আরো কতজনকে এই এক গল্প শুনিয়েছেন?' অমলবাবু একটু কড়া
গলায় প্রশ্ন করলেন |
লোকটা আবার খুকখুক করে হেসে উত্তর দিল |
'চিন্তা করবেন না |
কেউ আপনাকে গল্প চুরির
অপবাদ দিতে আসবে না |'
এবার একটু থেমে লোকটা বলল
'তবে শুরু করি?'
***
এই গল্প সুবীর হালদার নামক
এক লেখকের | সুবীরবাবু প্রথমে টুকটাক ম্যাগাজিনে লিখতেন | সবাই যে
ভাবে শুরু করে আর কি | ম্যাগাজিন থেকে
কিছু চেনা অচেনা পত্রিকাতেও লেখা প্রকাশ হতে লাগল তার| মূলত ছোট গল্প
লিখতেই পছন্দ করতেন |
তবে লেখার বিষয় নিয়ে যদি
জিজ্ঞেস করেন তাহলে ঠিক কি যে বলি বুঝতে পারছি না | ওই যাকে আঁতেল মার্কা গল্প বলে আর কি | সারমর্ম কিছুই নেই |
ফাঁকা| তবে কি জানেন তো , অনেক সময় পাঠকের ঘটে যা ঢোকে না , সেটা তারা খুব ভালো মানের মনে করে | এইভাবেই সুবীরবাবুর নাম ডাক হল | একটা বই ও বেরোলো | তবে সেটাই হল তার বিপত্তির শুরু |
তার লেখা উপন্যাস গ্রহণ করতে পাঠকরা নারাজ হলেন| প্রকাশনী সংস্থার বেশ ক্ষতিও হল এতে | এরপর যা হয় আর কি
| সুবীরবাবুকে আর
সুযোগ দিতে চাইলেন না তেমন কেউ | এদিকে লেখার পেছনে পুরো সময়টাই দেবেন ঠিক করে
বই লেখবার মাঝেই সরকারি চাকরিটাও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি | যেটুকু গর্ব বা
স্বল্প খ্যাতি থেকে পাওয়া ঔদ্ধত্য অবশিষ্ট ছিল তাও তলিয়ে গেল কোথায় | অর্থ রোজগারের চেষ্টায় পাল্প ফিক্শন লিখতে হল | তাতে উঠতি বয়েসের
কিছু লোকজন তার লেখা কিনল বটে, পাঠক মহলে আবার করে এক আস্তানা পেলেন ঠিকই, কিন্তু সে লেখা
কি আর সাহিত্য বলে মানা যায় বলুন দেখি? এসব লেখা তো একবার পড়বার পর ডাস্টবিনে স্থান পায় |
ভেতরে ভেতরে গ্লানি রোজ কুঁড়ে কুঁড়ে খেতে লাগল তাকে|
এর কিছু মাস পর, একদিন সুবীরবাবু যখন কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়াতে
একটা ধুলো মাখা বই নেড়েচেড়ে দেখছিলেন, হঠাৎ বইয়ের ভেতরে থাকা
একটি কাগজ তার চোখে পরলো |
কাগজে শুধু লেখা : গল্পের সন্ধান | সাথে কলকাতার ল্যান্সডাউনের একটি ঠিকানা |
প্রথমে নামটা দেখে তার মনে হয়েছিল এটি হয়তো কোনো সংস্থা কিংবা নতুন কোন বইয়ের
দোকান | কিন্তু মানুষের
মন বুঝলেন! নিজের দরকারের
সময়ে অল্প সামঞ্জস্য পেলেও আশার আলো ভেবে বসে | তখন যে সুবীরবাবুর একটা ভালো গল্পের খুব প্রয়োজন|
কাগজে লেখা ঠিকানা খুঁজতে বেরিয়ে একটি ফ্ল্যাটবাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন
সুবীরবাবু | সিঁড়ি দিয়ে তিনতলায় উঠতেই বাঁ হাথে দেখতে পেলেন
দরজায় লেখা 'গল্পের সন্ধান' | সামনের দরজা খোলা |
সুবীরবাবু দরজায় টোকা
দিতেও কাউকে দেখতে পেলেন না |দুকামরার ফ্ল্যাট, তবে তার মধ্যে একটি ঘর খোলা রয়েছে | অপর বেডরুমে তালা ঝুলছে| কেউ কোথাও নেই | অথচ সব ঘর গুলোই কিন্তু বেশ ছিমছাম ভাবে যাবতীয় সব সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো | পরিপাটি করে গোছানো বিছানা, তার উপর রাখা কিছু খালি কাগজ ও একটি কলম | ঘরের এক কোনায় রাখা আছে একটি টাইপরাইটার ও বসবার জন্য কুশন দেয়া একটি চেয়ার | যেন কেউ তারই থাকবার ও গল্প লেখবার জন্য ঘরটি
সাজিয়ে রেখে গেছে|
আর কিছু চিন্তা না করে সুবীরবাবু চেয়ারটায় বসে গল্প ভাবতে লাগলেন | টাইপরাইটার সুবীরবাবুর আঙুলের চাপে টুকটাক
আওয়াজ করে কাগজে শব্দ বুনতে থাকল | লিখতে লিখতে কখন
যে রাত হয়ে গেছে টের পাননি তিনি | তখনও ঘরে আর কোনো
প্রাণীর খোঁজ পাওয়া যায়নি | এই ভাবে লিখতে
লিখতেই ঘুম এসে গিয়েছিল তার |
ঘুম ভাঙল একদম সকালে | এবং তখন থেকেই
সুবীরবাবুর জীবন একদম পাল্টে গেল |
প্রথমেই তার চোখ গেল লেখার কাগজ গুলোর দিকে | সবকটা কাগজ আজ ফাঁকা | তার লেখা কোন
শব্দই তাতে নেই | কিন্তু সে কি করে সম্ভব? কেউ কি ঘরে ঢুকে কাগজ গুলো বদলে দিয়েছে ? সুবীরবাবু অনেক খুঁজলেন কিন্তু লেখাগুলো আর
ফেরত পেলেন না | তিনি আবার লিখলেন এবং তার পরের দিনও একই ভাবে
সুবীরবাবুর লেখা আর খুঁজে পাওয়া গেল না | এমনকি তিনি এটাও
বুঝতে পারলেন যে তার করা সব কাজ প্রত্যেকদিন এক ভাবেই রুটিনের মতো পুনরায় হয়ে
চলেছে |
নিজের কাজ গুলো অন্যভাবে ভিন্ন সময়তে করা, ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যাওয়া সবই করেছেন | কিন্তু সকালে যখন
ঘুম ভাঙে আবার তার দিন শুরু হয় 'গল্পের সন্ধান' ফ্ল্যাটের বিছানা থেকেই | তিনি এটাও খেয়াল করেছেন যে এতদিনে তার গালের
দাড়িও একরকম রয়েছে |
সুবীরবাবু আটকে গিয়েছিলেন
এক ভয়ঙ্কর টাইম লুপে |
তারপর থেকে তিনি যত
চেষ্টাই করেছেন সেটি থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনভাবেই সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি |
***
চায়ের দোকানের আগন্তুক এবার গল্প থামালেন|
‘তারপর ? গল্প তো শেষ হল না | '
অমলবাবু প্রশ্ন করলেন |
'সব গল্পের শেষ জানতে নেই, দাদা | ' লোকটা কথাটা বলে
বেঞ্চ ছেড়ে উঠে পরলো |
একটি প্রশ্ন অনেক্ষন থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছিলো অমলবাবুর মাথায় | এবার একটু ইতস্তত
করে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন:
'আপনিই কি সুবীর হালদার ?'
'ধুর মশাই | আমি কেউ না |' লোকটা আবার সেই আজব শব্দ করে হেসে বলল |
'আচ্ছা! এইটা অন্তত বলে যান যে লেখক কেন টাইম
লুপে আটকে গেল?'
'আপনারা তো শিল্পী মানুষ | আর শিল্প কে
আপামর জনতা মর্যাদা দিতে জানবে না এটাই তো পৃথিবীর নিয়ম |
তা বলে খালি অর্থ উপার্জন
আর খ্যাতির জন্য আপনারা নিজেদের শিল্পী সত্তা ভুলে বস্তাপচা প্লটকেই একটু ঘষে মেজে
বারবার নতুন মলাটে মানুষকে উপহার দেবেন? আপনার ভালো কাজটা লোকে নিল না বলেই যা মানুষ পড়ে সেটাই লিখবেন? তাহলে মশাই আপনাদের সাথে ব্যবসায়ীদের অন্তর কি
থাকল?'
কথাগুলো বলে লোকটা আর দাঁড়ালো না | যেভাবে হঠাৎ তার প্রবেশ হয়েছিল সেই এক ভাবেই
চোখের নিমেষে যেন সে দূরে মিলিয়ে গেল |
ঘড়ির কাটা বলছে ১১:8৫. আকাশে মাঝে মধ্যেই রং বেরঙের আতশবাজির শব্দ কানে আসছে |
লোকটার কথা গুলোই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল তার | সত্যিই তো, তিনিই তো কতবার নিজেরই লেখা কত পুরোনো চরিত্রকে
নতুন মোড়কে অন্য নামে নতুন বইতে ব্যবহার করেছেন | কারণ খুবই সোজা |
চরিত্রগুলো জনপ্রিয়
হয়েছিল |
বাড়ি ঢুকে অমলবাবু দেখলেন মেঝেতে লুটোপুটি খাচ্ছে সারি সারি কাগজ | ভারি আশ্চর্য ব্যাপার তো! তার পায়ের কাছের একটি
পেপার তুলে নিয়ে পড়ে দেখলেন অমল সরকার|
'সুবীর হালদার এ বাড়ি ছেড়ে যায়নি | '
কাগজের লেখা পড়ে চমকে উঠলেন অমলবাবু | দ্রুত পায়ে সামনের বেডরুমে ঢুকলেন | আজ ঘরটা অগোছালো | বিছানা জোড়া কাগজের মেলা | টাইপরাইটার এখনো গরম| যেন এইমাত্র কেউ লিখছিল সেটায় | সুবীর হালদার ? লোকটার গল্পের বর্ণনায় তো ঠিক এইরকমই ছিল 'গল্পের সন্ধান' ফ্ল্যাটের ঘর |
অমলবাবু আর অপেক্ষা না করে নিজের ঘরের তালা খুলে ভেতরে ঢুকলেন| সব কিছু যেন শীতকালের আকাশের মতো পরিষ্কার হয়ে
যেতে লাগল তার কাছে |
লোকটাকে হয়তো এইজন্যই এতো
চেনা মনে হয়েছিল | এ গল্প কি তিনি আগেও শুনেছেন? কতবার ? সেটা তিনি আর মনে করতে পারছেন না | চাইছেন না হয়তো | চাইলেও আর কিচ্ছু করণীয় নেই |দেওয়ালে ঝোলা ঘড়িতে বারোটা বাজল |
অমলবাবু নিজের বিছানা হাতড়ে 'আবেগ' ম্যাগাজিনের শীতকালের ইস্যুতে নিজের লেখা গল্প
বার করে দেখলেন | কিশোরদের জন্য লেখা খ্রীষ্টমাস নিয়ে একটি ছোট
গল্প | হতভম্ব হয়ে বিছানায় বসে পরলেন অমলবাবু |
সুবীর বাবুর মতো তিনিও কি 'গল্পের সন্ধান' ফ্ল্যাটের 'টাইম লুপ ' এর শিকার ? অমলবাবুর মনে এল আরো অনেক জনপ্রিয়
লেখকদের নাম ! তাদেরকেও কি 'টাইম লুপ' এর কাছে হার স্বীকার করতে হয়েছে?
***
নতুন বছরের আট মাস কেটে গেছে | অমল সরকারকে আজ
বিকেলে ফোন করেছিলেন 'আবেগ' পত্রিকার সম্পাদক অমূল্য পাঠক | বেশ আবদার করেই বললেন এবারের শীতকালের ইস্যুর জন্য একটি থ্রিলার গল্প লিখতে | বেশ ভাল প্রস্তাব অমলবাবুর মনে হয়েছে | চেষ্টা করবেন বলেছেন |
গল্পের নাম টাও এর মধ্যে বেশ মাথায় খেলে গেল| বছরের শেষ গল্প| বেশ জমিয়ে দেয়া যাবে মনে হয় |
***
নতুন বছর যে কিভাবে কেটে গেল বোঝাই গেল না | আজ বছরের শেষ রাত |
কয়েক সপ্তাহ আগেই অমলবাবু
'আবেগ' পত্রিকাতে তার
লেখা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন |
থ্রিলার গল্পটি লিখতে
বেশি সময় লাগেনি তার |
আশা করা যায় 'চেনা ফর্মুলা' আবার পাঠকদের মন জয় করবে |পত্রিকার এক কপি
বাড়িতেও এসেছে | খুলে দেখা হয়নি অমলবাবুর|
কনকনে ঠান্ডায় অমলবাবু ভাবলেন পাশের দোকানটায় গিয়ে এক গ্লাস চা খেয়ে এলে মন্দ
হয় না | বেরিয়েও পরলেন | ঘড়িতে তখন বাজে রাত ৯ টা|
Comments
Post a Comment